-“আরে সকাল-সকাল যে,
কেমন আছেন?”
-“ভালোই... ভাবলাম আজ
শুভদিনে তোমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে যাই।”
-“আরে... ধন্যবাদ। আপনি
আবার কষ্ট করে...”
-“ঠিক আছে... এমন কিছু
পরিশ্রম নয়... অনেক আশীর্বাদ রইল তোমার জন্য।”
প্রণাম ও আশীর্বাদের পালা
মিটবার পর,
-“ তা আপনার শরীর এখন
কেমন? আপনারও তো সামনে জন্মদিন আসছে...”
-“এই চলে যাচ্ছে... এই
বয়সে এসে আর শরীরের কথা ভাবি না... তবে মন ভালো নেই...চারদিকে যা হচ্ছে...”
-“সে আর বলতে...”
-“এই তো সেদিন... নিজের
মনে গীতাঞ্জলী ভাবতে গিয়ে ভেবে ফেলেছি গীতবিতান যাব। ব্যাস্ দেখি গড়িয়ার খালের
বদলে ভুল করে বোলপুরের কাছে কোন জঙ্গলে পৌঁছে গেছি! কেন যে এসব হচ্ছে!”
-“হ্যাঁ... আজকাল তো
এসবই চলছে... বাবা লিখেছিলেন... ছিল রুমাল, হল বেড়াল... কদিন পরে তালব শ্য ও হতে
পারে... এর পর থেকে যখন তখন আমার কথাও ভাববেন না... হঠাৎ করে অজয়নগর পৌঁছে যেতে
পারেন!”
-“তাই নাকি? কী
সর্বনাশ!”
-“হ্যাঁ... তবে যেখানেই
যান বাস স্ট্যান্ডে আপনার লেখা গানই বাজছে। অবশ্য রাস্তায় এখন একটা গানই বাজা
উচিত... আমরা সবাই রাজা... ট্যাক্সিগুলো মিটারের ওপর এক্সট্রা ছাড়া নিজেদের বাড়ী
অবধি যায় না, অটোগুলো রাস্তার চেয়ে বেশী ফুটপাথ ধরে চলে আর একই রুটের দুটো বাস এসে
গেলে মনে হয় যেন বেন হুরের চ্যারিয়ট রেস হচ্ছে!”
-“জানি... আর আমি তো এখন সার্বজনীন...সার্ধশতবর্ষের সময় অনেকেই শ্রাদ্ধশতবর্ষ করে ছেড়েছে। তা তুমি বোধ হয়
এখনও অতটা ছড়িয়ে যাওনি... তাই না?”
-“নাহ্... কপিরাইটের
দৌলতে... তবে তাতেও যা হচ্ছে!”
-“ওহ্... ভালো কথা,
বাদশাহী আংটি দেখলে?”
দীর্ঘ নিস্তব্ধতা...
“জন্মদিনের দিন আবার
এসব কথা কেন?” গলায় কি একটু শ্রদ্ধা মিশ্রিত বিরক্তির আভাস?
“না... না... আমি
আসলে... হে হে... মাঝে মাঝে একটু ইয়ার্কি মেরে ফেলি... জানোই তো... কোনদিন এত বুড়ো
হব নাকো আমি, হাসি তামাশারে যবে কবো ছ্যাবলামি।”
“ওহ্... তা বটে... তা
আপনি বসুন না, ইউটিউবেএই ভিডিওটা দেখুন, আমি ততক্ষণ দেখি, আপনার জন্য সাইলেন্সার
না লাগানো বিস্কুট আর চায়ের ব্যবস্থা করি।”
“আরে... এরা কে গো?”
“এদের নাম সলমন খান এবং
ক্যাটরিনা কাইফ... আমি যাই”
২ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড পর
কবি উঠে পড়লেন। এর পর আর চা গলা দিয়ে নামবে না। এর চেয়ে খারাপ কিছু হতে পারে কি?
হাঁটতে হাঁটতে তাঁর মনে
পড়ল, কদিন আগে কারা যেন তাঁকে বৌদিবাজ বলেছে!