“আমেরিকায় দেখবেন কেউ বিজ্ঞান নিয়ে কিছু বললে খবরের কাগজগুলো সেটা নিয়ে প্রথম পাতায় খবর করে, হইচই হয়, তারপর লোকে বিচার করে ঠিক না ভুল। আর এখানে দেখুন, খবরের কাগজগুলো এই সব ছাপতেই চায় না। আমি তো বলছি, ছাপুন, তারপর লোকে পড়ুক, প্রমান করতে বলুক। আমি প্রমাণ দিয়ে দেব। আমার কাছে প্রমাণ আছে। কিন্তু ওদের কারো সাহসই নেই আমার সঙ্গে কথা বলার।” এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে থামলেন ভদ্রলোক।
এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতেই পারছেন যে, আমার সঙ্গে বিখ্যাত কার্তিক চন্দ্র পাল ওরফে কে. সি. পালের দেখা হয়েছিল এই বইমেলায়। যিনি নিজে আজ থেকে প্রায় ২০-২৫ বছর আগে কলকাতার দেওয়াল ভরিয়ে ফেরেছিলেন ‘সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে’ এই লিখে। আমার কলকাতার রূপকথার গল্পের একটি অংশ হলেন কে. সি. পাল আর তাঁর এই মতবাদ।
ভদ্রলোককে আগেও অনেকবার দেখেছি। বইমেলাতে তো বটেই, এমনকি কদিন আগেই তাঁকে দেখেছিলুম নন্দন চত্বরে।
মনে রাখবেন, ওনার নিজের কাছে কিন্তু এই মতবাদ নিয়ে এক ফোঁটা সন্দেহ নেই। তিনি নিশ্চিত যে তিনি ঠিক, লোকে স্বীকার করছে না এইটুকুই যা। মনে মনে তিনি গ্যালেলিও বা কোপার্নিকাসের সমকক্ষ একজন। যে জন্য নিজের লাখ লাখ টাকা খরচ করে ফেলেছেন তাঁর এই মত প্রচারের জন্য। তাঁর এই মতবাদ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন নাসায়, যে চিঠির মার্জিত উত্তরে নাসা তাঁকে জানিয়েছে যে, বর্তমান মতটিই তাদের পছন্দ এবং ওটা দিয়েই তাদের বেশ কাজ চলে যাচ্ছে।
যে দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে তিনি সূর্যের বার্ষিক পৃথিবী পরিক্রমণের কথা বলে যান তাঁর দর্শকদের (হ্যাঁ, দর্শক। অনেকেই শুধু দাড়িয়ে তাঁর কথা শুনে চলে যাচ্ছিলো, বই কিনছিল হাতে গোনা কয়েকজন), যেভাবে ১০ টাকার বিনিময়ে (সঙ্গে ২ টাকার লিফলেট বিনামূল্যে) নিজের বই বিক্রি করে নিজের মতবাদ প্রচারের সময় জ্বলজ্বল করে ওঠে ওনার চোখগুলো সেটা হয়তো সামান্য হলেও দাগ কেটে যায় তাঁর পাঠকদের মনে।
হয়তো ভদ্রলোক পাগল। হয়তো ওনার এই মতের কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই কিন্তু তা সত্বেও ওনার আবেগ, ওনার বিশ্বাস, ওনার নাছোড়বান্দা মনোভাবের তুলনা মেলা ভার। আর সেখান থেকেই ওনার সঙ্গে কথা বলার পর হয়তো সামান্য হলেও কোথাও যেন মনে হয়, যদি ভদ্রলোক ঠিক হন, যদি একদিনের জন্যও ভদ্রলোকের থিয়োরিটাকে মেনে নেওয়া হয়, তাহলে হয়তো সেই একটা দিন কার্তিকবাবু নিশ্চিন্তে ঘুমতে পারবেন, ঐ একটা দিন কার্তিকবাবু হবেন পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ।
আর আমরা, যারা সকলেই কিছু না কিছু স্বপ্নের পেছনে ছুটে বেড়াই তারা তখন হাততালি দিতে দিতে জানবো যে আমাদের মতই একজন তাঁর নিজের স্বপ্নটা খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু ততক্ষন আমার এই ব্লগের লেখাটুকুই সম্বল ওনাকে সম্মান জানানোর জন্য।
bhodrolok'er passion niye sotyi'i kotha hobe na
ReplyDeleteja bolechhis... eita niye aklanto bhabe shesh 30-40 bochhor lore jachchhen!!
ReplyDeleteখুব ভাল লিখেছো, স্বপ্নিল... পড়ে বেশ লাগলো।
ReplyDeleteBy the way, ভদ্রলোকের সঙ্গে কেউ তর্ক করেনি? নাকি পাত্তা দিতে হবে ভয়ে কথা বলেনি?
Bere likhechis, bhodroloker sathe alap korar ichhe ache. tui abar boimela gele amar jonyo ek copy 10 takar boi kinis to
ReplyDeleteSunando, 2-1 jon proshno korchhilo. keu torko koreni. asole bhodrolok emon confidently nijer theory ta bolen je, oi somoy torko kora osombhob.
ReplyDeleteTobe beshir bhag lok-i 'ei sei KC Paul' hab bhab niyei dnarie porchhilo.
Kanad, Gele kine nebo, ar ek copy. nahole amar copy-ta to roiloi.
ReplyDeleteএতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতেই পারছেন যে, আমার সঙ্গে বিখ্যাত কার্তিক চন্দ্র পাল ওরফে কে. সি. পালের সঙ্গে দেখা হয়েছিল এই বইমেলায়।
ReplyDeletesonge kothata dubar eseche bhul kore
ভদ্রলোককে আগেও আনেকবার দেখেছি।
aa hobe na aw hobe
ar bakita oshdharon .. amar expectation ektu onyo chhilo jodio lekhata theke..jai hok.. well done ..tomar hobe :P
Bhulgulo corrected. Thanks!
ReplyDeleteAr tor expectation ki chhilo lekhata theke?