Friday, January 17, 2014

অর্কবতী নদীর ধারে...

ব্যাঙ্গালোরে এসে বসবাস করছি তাঁর প্রায় দু বছর হতে চলল। এই দু বছরে আমাদের ভ্রমণপিপাষু বন্ধুদের গ্রুপ যার আবার ‘Bangalore explorers’ বলে একটা বেশ গালভরা পোষাকি নাম আছে বেশ অনেক জায়গাই ঘুরে এসেছি। সেগুলোর মধ্যে নানা রকম উইকেন্ড ট্রিপ, ডে ট্রিপ দুইই ছিল।
এবার ঠিক করা হল একটা বাংলা পিকনিক করা হবে। হ্যাঁ জিজ্ঞেস করতেই পারেন, বাংলা পিকনিক জিনিসটা ঠিক কী? এই প্রশ্নটা প্রথমে সবার মনেই ছিল। সৌম্যজিতের মত দুষ্টু লোকেরা  তো বলেই ফেলেছিল, “বাংলা পিকনিক কী? যেখানে শুধু বাংলা পান করা হবে?” তখন তাকে জানানো হয়েছিল যে, বাংলা পিকনিক হল ৯০ দশকের মত পিকনিক যেখানে ম্যাটাডোর ভাড়া করে যাওয়া হবে, গ্যাস নিয়ে গিয়ে খোলা মাঠে রান্না হবে, লাউডস্পিকারে পাগলু-২ র গান বাজবে আর ফাইনালি ৪টের সময় আধসেদ্ধ মাংস খাওয়া হবে! হুঁ হুঁ বাওয়া!

দলে রইলাম আমি, সায়ন্তন, প্রশান্ত, সৌম্যব্রত, কণাদ, বুধাদিত্য এবং তুষার। সঙ্গে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদান করলেন চার কাকিমা মানে সায়ন্তন, প্রশান্ত, কণাদ এবং বুধাদিত্যের মা এবং সায়ন্তনের অর্ধাঙ্গিনী অর্পিতা। সব মিলিয়ে যাকে বলে জবর বারো!
দলবল ঠিক হওয়ার পরের প্রশ্ন হল কোথায় যাওয়া যায়! একটা আদর্শ পিকনিক স্পট চাই। খুব বেশী দূরেও নয় এবং খুব বেশী ভিড়ভাট্টাও থাকবে না এরকম এক জায়গা। কারো জানা ছিল না এরকম জায়গা তাই শেষ অবধি মহর্ষী গুগলানন্দের শরণাপন্ন হতে হল। তারপর বিভিন্ন জায়গা নিয়ে পড়াশুনো করে, নেট ঘেঁটে, ফোন করে শেষ অবধি জায়গা ঠিক হল ব্যাঙ্গালোর থেকে ১২০-১৩০ কিলোমিটার দূরে মেকেদাতু যার অর্থ হল ‘ছাগলের লাফ’! তবে ঠিক মেকেদাতু নয়, সেটার ৫ কিলোমিটার আগে কাবেরী আর অর্কবতী নদীর সঙ্গমস্থানকেই শেষ পর্যন্ত পিকনিকের জন্য চূড়ান্ত করে ফেলা হল। তারিখ ঠিক হল ১২ই জানুয়ারী ২০১৪।
এর পরের কাজ হল পিকনিকের মেনু ঠিক করা আর জিনিসপত্রের ফর্দ করা। সে ব্যাপারটাও কম উত্তেজক হল না। রাজহাঁসের ডিমের মত হাইফাই জিনিস না থাকলেও ব্রেকফাস্টের কেক, কলা, ডিমসেদ্ধ, লেডিকেনি, মাংসের পাকোড়া। দুপুরের জন্য ভাত, ঘি, মুগডাল, বেগুনি (ফর্দে বলা ছিল মুড়ি-মুড়কির মত), মাংস, চাটনি, রসগোল্লা। আর বিকেলে ফেরার পথে কমলালেবু, কেক আর চিপস্‌। মন্দ নয় খাবারের লিস্টটা।
খাবারের সঙ্গে সঙ্গে বাসনপত্রের তালিকাও বানানো হল। কারো বাড়ি থেকে হাঁড়ি, কারো বাড়ি থেকে কড়াই, প্রায় সবার বাড়ি থেকে ছুরি বা আলুর খোসা ছাড়ানোর ফিলারের ব্যাবস্থা করা হল। এমনকি প্রশান্তের বাড়ি থেকে রান্না করার জন্য উনুন পর্যন্ত নিয়ে আসা হবে ঠিক হল। গাড়ির জন্য বলা হল রাজেন্দরকে, ডিডি গেঞ্জির মতই যার ওপর চোখ বন্ধ করে ভরসা করি আমরা।
পিকনিকের ঠিক আগের দিন সন্ধ্যেবেলা মারাথাল্লির বাজারে ঘুরে ঘুরে বেশীরভাগ জিনিস কেনাকাটা করল সায়ন্তন, প্রশান্ত আর বুধাদিত্য। আমি আমার পাড়ার বেকারি থেকে কিনলাম কেক আর ব্রত করল আমাদের ফলাহার আর কাগজের প্লেটের ব্যবস্থা!

পিকনিকের দিন ঠিক ভোর পাঁচটায় ড্রাইভারের ফোনে ঘুম ভাঙ্গল। যদিও পরে অর্পিতার কাছে শুনলাম সায়ন্তন নাকি ভোর সাড়ে চারটে থেকে উঠে বসেছিল!
মোটামুটি তৈরী হয়ে বাকিদের ফোন করা শুরু করলাম। বেশীরভাগ লোকজনই উঠে পড়েছিল এমনকি তুষারও। কিন্তু ব্রতদাকে ঠিক ৬টার সময় ফোন করে ঘুম ভাঙ্গাতে হল! এখনো ওঠনি কেন জিজ্ঞেস করায় ব্রতদা বলল, “অফিসে কাজ ছিল তো তাই ফাইনালি তোরা কোন সময়টা ঠিক করেছিলি সেটা ঠিক ফলো করতে পারিনি!”
যাই হোক, ব্রতদার তৈরী হতে বেশী সময় লাগে না, তাই বেশ সময় মতই বেরিয়ে পড়া গেল। তারপর একে একে ব্রতদা, তুষার, সায়ন্তনদের, প্রশান্তদের আর কণাদদের তুলে নেওয়ার পর আমরা পৌঁছলাম বুধার বাড়ি। আর সেখানে গিয়ে দেখলাম বুধা খালি গায়ে হাফ প্যান্ট পরে ঘুরছে!!
কাকিমার কাছে জানা গেল যে বুধা প্রায় সারা রাত ঘুমোয়নি কিন্তু তা সত্বেও সময়ে তৈরী হয়ে উঠতে পারেনি। তবে যাই হোক, সব জিনিসপত্র বুধার বাড়ি থেকে গাড়িতে তুলতে তুলতেই বুধাও তৈরী হয়ে এসে হাজির হল আর আমরাও সাড়ে সাতটার মধ্যেই রওয়ানা হয়ে গেলাম সঙ্গমের জন্য।
গাড়িতে যেতে যেতে নব্বইয়ের দশকের সেই শানুদার নাকি সুঁরে গাঁওয়া গাঁন শুঁনিয়ে আমাদের ড্রাইভার আমাদের সকলকেই বেশ নস্টালজিক করে তুলেছিল। তাঁর সঙ্গে গুন্ডা, ক্লার্ক ও অন্যান্য কালজয়ী হিন্দি ও বাংলা সিনেমা নিয়ে আলোচনা করতে করতে এবং ডিমসেদ্ধ, কলা, কেক, পান্তুয়া সহযোগে প্রাতরাশ করতে করতে দশটা বাজার আগেই আমরা পৌঁছে গেলাম কাবেরী আর অর্কবতী নদীর সঙ্গমে।
যা ভেবেছিলাম জায়গাটা তার চেয়ে অনেক বেশী জমজমাট। বেশ কিছু ছোটখাটো দোকানে সিগারেট, কোল্ডড্রিঙ্কস, বিস্কুট বিক্রি হচ্ছে, সঙ্গে এখানকার নদীতে ধরা মাছভাজাও আছে। তার সঙ্গে আছে দুটো বেশ ঠিকঠাক রেস্টুরেন্ট এমনকি থাকার জন্য একটা লজও। আমরা দশটার আগে পৌঁছে যাওয়ায় তখনো অতটা ভিড় হয়েনি কিন্তু বেলা বারোটা বাজতে বাজতে প্রচুর লোক এসে পৌঁছেছিল সঙ্গমে।
অর্কবতী নদী কাবেরীর সঙ্গে মিশে একটা ইংরেজি ‘Y’ অক্ষরের মত নদীবক্ষ তৈরী করেছে। বেশীর ভাগ জায়গাতেই নদীটা মোটেই গভীর নয়, বড়জোর কোমর জল, তবে জায়গায় জায়গায় যে যথেষ্ট গভীর সেটা পরে জেনেছিলাম। নদীর জল বেশ পরিষ্কার। জলের তলার গ্রানাইট পাথরগুলো পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল। তার মধ্যে আবার কয়েক জায়গায় নদীর মধ্যে পাথর জমে ছোট ছোট দ্বীপের সৃষ্টি হয়েছিল আর নদীতে পরে থাকা অসংখ্য পাথরে পা দিয়ে সেই দ্বীপে যাওয়া খুবই সহজ কাজ। নদীর এক ধারে চরের পাশ থেকে জঙ্গল শুরু হয়ে গেছে। সেই জঙ্গলে ৫ কিলোমিটার গেলেই মেকেদাতু। আর সামনের দিকে তাকালেই দেখতে পাচ্ছি নদীর ধার দিয়ে একের পর এক পাহাড় উঠে গেছে। সেটা একটা দারুণ সুন্দর দৃশ্য।
প্রথমে ভেবেছিলাম ওরকম একটা পাথরের দ্বীপেই আমাদের সব জিনিসপত্র সাজিয়ে নিয়ে বসব কিন্তু তারপর কাকিমাদের অসুবিধা হতে পারে ভেবে সেটা বাতিল করা হল। তার বদলে আমরা জায়গা বাছলাম নদীর ধারে মোটামুটি গাছের ছায়া আছে এমন একটা জায়গা দেখে।
(সৌজন্যে বুধাদিত্য)
জায়গা ঠিক করার পরেই জিনিসপত্র সাজিয়ে নিয়ে বসা হল। চাদর পেতে বসার ব্যবস্থা হয়ে গেল। ঠিকঠাক জায়গা দেখে রাখা হল গ্যাসের উনুন আর জলের জায়গা। ঠিক আদর্শ পিকনিকের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেখা গেল যে প্রশান্ত উনুনের গ্রেটস আনতে ভুলে গেছে সুতরাং ৩টে ৩টে ৬টা পাথরের টুকরো জোগাড় করা হল বদলি হিসেবে।
মোটামুটি গুছিয়ে বসার পর প্রথমেই কাকিমা অর্থাৎ বুধার মা বসে গেলেন সেই মুড়ি-মুড়কির মত বেগুনি আর চিকেন পাকোড়া ভাজতে। সঙ্গে হাত লাগাল অর্পিতা। আহা! সে বড় ভালো জিনিস ছিল।
পুরো রান্নার বর্ণনা দিয়ে পাঠকদের একঘেয়েমি বাড়ানোর মানে হয় না তবে কয়েকটা উল্লেখযোগ্য তথ্য না দিয়ে পারছি না।

(সৌজন্যে বুধাদিত্য)
১. সায়ন্তন পেঁয়াজের খোসা ছাড়াতে জানে না সেটা জানা গেল।
২. যদিও সায়ন্তনের সবজি কাটা অর্পিতা খুবই পছন্দ করেছে। সেটা মনে হয় না সায়ন্তনের জন্য ভালো খবর!
৩. প্রশান্ত খুব সুন্দর করে আড়াই কেজি মাংস মেখেছে নুন, লঙ্কা, হলুদ ইত্যাদি দিয়ে।
৪. আমি মাংস রান্না করতে করতে একটা হাত-মোছা পুড়িয়ে ফেলেছিলাম, শুধু তাই নয় তারপর ঐ জ্বলন্ত কাপড় দিয়ে কনুই মুছছিলাম আর ভাবছিলাম এতো গরম কেন লাগছে!
৫. পরে অবশ্য ঐ হাত-মোছাটাকেই কাঁধে ফেলে ‘আমি শ্রী শ্রী ভজহরি মান্না’ গাইতে গাইতে মাংস নেড়েছি।
৬. কণাদ প্রথমে প্রফেশনালি আলুর খোসা ছাড়িয়ে দেখিয়েছে, পরে বামিয়ানের শায়িত বুদ্ধ মূর্তির মত পোজ দিয়েছিল।
৭. ব্রত যেমন থাকে সেরকম চুপচাপই ছিল আর পরে থাকা পাথর, গাছের ডাল, পাতা দিয়ে দারুণ উনুন বানিয়েছিল। তার আগে ঘণ্টা খানেক ধরে একটা হাঁড়ির তলায় মাটি লাগিয়েছিল যাতে পরে ওটা মাজতে সুবিধা হয়। পরে ঐ হাঁড়িতেই ওর বানানো উনুনে ভাত রান্না হয়েছিল।

(সৌজন্যে বুধাদিত্য)
৮. অর্পিতা নিজে খুব সুন্দর করে স্যালাড কেটেছিল। সে এক দেখার মত জিনিস!
৯. বুধা ফোটগ্রাফারের দ্বায়িত্ব পালন করছিল আর তুষার টুকটাক সবেতেই হাত লাগাচ্ছিল। কোন কিছুতে স্পেশালাইজ করেনি।
১০. যদিও ওখানে ১২ জন ছিলাম তবে পুরো আলোচনা শুনলে মনে হচ্ছিল আসলে লোকের সংখ্যা ১৪। শ্বেতা (বুধার অর্ধাঙ্গিনী) এবং পিউ (আমার হবু) ওখানে না থাকলেও গল্প গুজব ওদের নিয়েই হচ্ছিল বেশী।
(সৌজন্যে বুধাদিত্য)

রান্না আরো কিছুটা এগনোর পর সায়ন্তন, তুষার আর আমি গ্রাম্য মহিলাদের মত নদীর ধারে গিয়ে এঁটো বাসন মেজে আনলাম। সেই চকচকে মাজা বাসন দেখে সবার কি প্রশংসা!
মোটামুটি তিনটে নাগাদ খাওয়া-দাওয়া শুরু হল। সকাল থেকে বেগুনি আর পাকোড়া খেয়ে সবারই প্রায় তখন পেট ভর্তি, তাও হাল্কা করে ভাত, ডাল, আলুভাজা, মাংস আর চাটনি খাওয়া হল সবাই মিলে।
খাওয়া-দাওয়ার পর দলবল গেল বাকি বাসনগুলো মাজতে আর আমি রয়ে গেলাম কাকিমাদের আর অর্পিতার সঙ্গে পাহারাদার হিসেবে। জমিয়ে দ্বিপ্রাহরিক আড্ডা হল খাওয়ার পর।
এসবের মধ্যে অন্য একটা ব্যাপার হয়েছিল। হঠাৎ খেয়াল করে দেখলাম নদীর ধারে প্রচুর ভিড় এবং লোকজন লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে নদীতে কিছু একটা দেখছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, আমাদের বয়সীই বন্ধুদের একটা গ্রুপ এসেছিল। তাদের মধ্যে একজন কিঞ্চিৎ মদ্যপ অবস্থায় জলে নেমেছিল, তাকে আর পাওয়া যাচ্ছে না। এবং খুব অদ্ভুতভাবেই এত এত লোক, তারা জলে না নেমে নদীর ধার থেকেই হাত-পা নাড়ছিল আর জলের মধ্যে লোকটাকে দেখার চেষ্টা করছিল। শেষ অবধি বিকেলবেলা বাকিরা বাসন মাজার সঙ্গে সঙ্গে ছেলেটির মৃতদেহ পাওয়ার খবরটাও নিয়ে এল। একটা আমাদের বয়সী ছেলে আমাদের মত পিকনিক করতে এসে একটা কোমর-জল নদীতে ডুবে দুম করে মরে গেল! একেই কি নিয়তি বলে।

যাই হোক, সামান্য হলেও তাল কেটে গেছিল তারপর। ড্রাইভার ও তাড়া দিচ্ছিল ফেরার জন্য, মোটামুটি সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সব কিছু গুছিয়ে নেওয়া হল। প্রচুর খাবার বেঁচেছিল, সেগুলো কাকিমারা ভাগ করে ফেললেন যার যার নামে। আমি একা থাকি বলে কিছু কাঁচা আলু আর কপিও জুটে গেল বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য।
ফেরার পথেও প্রচুর আড্ডা হল, রাস্তার মধ্যে গাড়ি থামিয়ে গ্রুপ ফোটো তোলা হল, কমলালেবু খাওয়া হল আর গাড়ির ড্রাইভার তার ক্রিকেটজ্ঞানের পরিচয় দিয়ে চমকে দিল সবাইকে (রঞ্জি সেমিফাইনাল থেকে আইপিএলের দলগুলো তো বটেই, এমনকি বিগ ব্যাশ লিগেরও খবর রাখে ছোকরা!)

সবাইকে নামিয়ে দিয়ে নিজে যখন বাড়ি পৌঁছলাম তখন সাড়ে নটা বেজে গেছে। সকাল থেকে ঘুরে ক্লান্ত ছিলাম বটে কিন্তু এত ভালো পিকনিকের পর নিজেকে দারুণ চাঙ্গাও লাগছিল। মনে রাখার মত একটা দিন। আবার যাবো কাবেরী আর অর্কবতী নদীর সঙ্গমে, এবার পিউকে নিয়ে!
(সৌজন্যে বুধাদিত্য)

6 comments:

  1. দারুণ লাগলো পড়ে। ছবির মতো দিনটাকে ফুটিয়ে তুলেছ তপোব্রত। জ্বলন্ত কাপড় দিয়ে কনুই মোছার জায়গাটা পড়ে খুব হাসছি। গুড় জব।

    ReplyDelete
  2. Dhonyobaad Kuntala... picnictai asole khub mojar chhilo... sei ghotonagulo likhe ditei mojar golpo hoye gechhe...

    ReplyDelete
  3. আমার দারুণ লেগেছে - কিন্তু তুই ব্যাঙ্গালোর গেলি দু'বছর হয়ে গেল? :O

    ReplyDelete
  4. Abhida, amar Bangalore jaoar por theke 1 bochhor 9 maas hoye gechhe!

    ReplyDelete

"It’s always very easy to give up. All you have to say is ‘I quit’ and that’s all there is to it. The hard part is to carry on”