Tuesday, February 11, 2014

বিবাহ অভিযান... [১]... প্রস্তুতি

১১ই ফেব্রুয়ারী, দুপুর ৩টে,
লগ্ন থেকে ১০০ ঘন্টা দূরে...

আহ্‌... সেই একখানা বাংলা গান ছিল না, ‘আসছে, সে আসছে’... এখন পাঠকের মনে প্রশ্ন উঠতেই পারে যে এখানে সে বলতে কবি কার কথা বলেছেন? সিনেমায় উত্তরটা অন্য ছিল কিন্তু এখানে সে বলতে বিয়ের দিন, বিয়ের হইচই, মজা-আনন্দ, দাঁত ক্যালানো, হাঙ্গামা-হট্টগোল এবং সব শেষে আমার হবু সহধর্মিনী... অনেক কিছুকেই বোঝানো যেতে পারে!
তা এখনও অবধি কি দাঁড়ালো ব্যাপারটা? বিয়ে হল গিয়ে ১৫ তারিখ, শনিবার। আমার এবং বাবার তাড়াহুড়োর দরুণ বাড়ির প্রথা মেনে অধিকাংশ কাজই অনেক তাড়াতাড়ি শুরু করা হয়েছিল। তার সুফল ভোগ করছি এখন। শ্রেয়ার শাড়ী কেনা শুরু হয়েছিল আগস্টে, আমার জামা-কাপড়, সাজগোজের সব জিনিস কেনা শেষ হয়েছে ডিসেম্বরেই। এমনকি তত্ত্ব সাজানোর কাজটাও মা তিন সপ্তাহ আগেই শুরু করায় সেটাও কমপ্লিট। যে দুটো ট্রে বাকি ছিল সেটা আমি আর মৃন্ময় রোববার সন্ধ্যেবেলা জাতিস্মর না দেখে শেষ করে ফেললাম। এই যে তাঁর ছবিঃ

আপাতত পায়ের ওপর পা তুলে দিয়ে বসে আছি। সামান্য ঘোরাঘুরি-ফোনাফোনি যে চলছে না তা নয়। এই ফোটোগ্রাফার, ডেকরেটর, ক্যাটারার... এদের সঙ্গে ফাইনাল করা। শেষ মুহূর্তের কিছু কেনাকাটা, ঘর গোছানো, পাড়ার এর-ওর বাড়ী থেকে লেপ-তোষক এনে এক জায়গায় রাখা... এসবও চলছে।
কাল মাসীমনিরা এসে পড়লে বাড়ীটা একটু জমজমাট হয়ে উঠবে, তবে আমার আত্মীয়স্বজন এতোই কম, এবং যারাও আছেন তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই এতো অসুস্থ যে বিয়েবাড়ীর ভিড়ভাট্টা ব্যাপারটা খুব বেশী হবে বলে আমার মনে হচ্ছে না। 
সবচেয়ে খারাপ লাগছে আমার বাবার বাল্যবন্ধু নিতাইকাকুর জন্য। নিতাইকাকু আমার বাবার সেই ছোট্টবেলার বন্ধু এবং মুঙ্গেরের (আমার পৈত্রিক বাড়ী যেখানে ছিল) সেই সময়ের বাঙ্গালীদের কাছে নিতাই মানেই শিবাজী (আমার পিতৃদেব), দুজনকে অনেকেই মাণিকজোড় বলেও ডাকতেন। নিতাইকাকু এখনও খুবই করিতকর্মা, বাবারই বরং শরীরটা ভেঙ্গে পড়েছে। নিতাইকাকু এবং কাকিমা পুরো দায়িত্ব নিয়ে আমার বাড়ীর তত্ত্বের বেশীরভাগ ট্রে সাজিয়েছিলেন। তারপর, এই শনিবারের আগের শনিবার মানে ১ তারিখ রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় এক সাইকেল আরোহীর ধাক্কায় নিতাইকাকুর ফিমার ভেঙ্গে গেছে। আপাতত নিতাইকাকু নার্সিংহোমে বন্দী, পুরো ঠিক হওয়ার জন্য তিন থেকে ছ মাসের চিকিৎসা, ফিজিওথেরাপি... এইসবের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। আমার বিয়েতে আসার কোন সম্ভাবনাই নিতাইকাকুর নেই! মাথাটা গরম হয়ে আছে সেই থেকে, রাস্তাঘাটের এইসব সাইকেল-আরোহী, অটোচালক... এদের একটু দেখেশুনে চলতে কি হয়!

যাই হোক, শেষ করার আগে বলে রাখি যে, এই ব্লগের উদ্দ্যেশ্য একটাই। বিয়ের ঘটনাবলীর একটা চলন্ত হিসেব রাখা এবং মজার কিছু ঘটলে সেটা লিখে রাখা। গত বছরের আমেরিকা ভ্রমনের সময় যেমন লিখেছিলাম (লিঙ্ক)। বিয়ের ১০০ ঘন্টা আগে শুরু করলাম, এরপর যখন যেমন সময় পাবো কিছু ঘটনা লিখে রাখব। বলা যায় না, কয়েক বছর পর হয়তো এটা পড়তে গিয়ে দুজনের এইসব পুরোন কথাগুলো মনে পড়ে যাবে আর বেদম হাসি পাবে তখন।



No comments:

Post a Comment

"It’s always very easy to give up. All you have to say is ‘I quit’ and that’s all there is to it. The hard part is to carry on”