... আগের গল্প
১৩ই ফেব্রুয়ারী
রাত ২টো ৩০
লগ্ন থেকে সাড়ে ৬৬ ঘন্টা দূরে...
আজকের ব্লগের
বিষয়টা শ্রেয়াকে বলতেই দাঁত কেলিয়ে বলল, “এমা... লিখো না। লোকে প্যাঁক দেবে!”
কিন্তু লোকে প্যাঁক দিতে পারে ভেবে কবে আর নিজেকে আটকেছি, আর তাছাড়া নিজেকে নিয়ে
যে হাসতে পারে সেই তো সবচেয়ে রসিক লোক! অন্তত আমার সেটাই মনে হয়।
আজ থেকে তিন মাস
আগে যদি কেউ বলত যে আমি একদিন দুপুর চারটের সময়ে পার্লারে গিয়ে সেখানে বসে তিন
ঘন্টা ধরে ফেসিয়াল ও অন্যান্য রূপচর্চা করব তাহলে আমি নির্ঘাত তাকে আজেবাজে ভাট বকার
জন্য গাঁট্টা মারতাম। কিন্তু আসন্ন বিয়ের দৌলতে এহেন অসম্ভব ঘটনাটাও ঘটল আজকে।
পার্লারের
ব্যাপারে বন্ধুবর মৃন্ময় দীর্ঘদিন ধরে তার নিজস্ব মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি লাগিয়ে আগেই
আমাকে ঘায়েল করেই ফেলেছিল। ওর কথা মতই ডিসেম্বরে প্রথমবার পা দিয়েছিলাম একটি
জেন্টস পার্লারে! আমাকে ভুল বুঝবেন না, তার আগে অবধি পুরুষ-মহিলা কোন পার্লারে
পদার্পণ করার সুযোগই আমার আসেনি।
পার্লারে যে
ছেলেটির হাতে মৃন্ময় আমার দায়িত্ব দিয়ে গেছিল তার নাম গোপাল। গোপাল বেশ সুবোধ
বালকের মতই আমাকে চেয়ারে আরাম করে বসালো এবং তার পরেই আমার মুখের বিভিন্ন অংশের
চামড়া টেনে টেনে দেখতে লাগল। সঙ্গে কোথাও আঙ্গুল ঘষল, কোথাও বা চিমটি কাটল। এমনকি
দু-একটা জায়গা যদি শুঁকেও দেখে থাকে তাহলেও আমি অবাক হব না।
অতঃপর আমার মুখের
চামড়াটাকে ভালো করে বাজিয়ে দেখার পর সে তার কেরামতি শুরু করল। মৃন্ময়ের আগে থেকেই
ডিটেলড ইন্সট্রাকশান দেওয়া ছিল। সেই অনুযায়ী ঘন্টা দেড়েক ধরে সে নানা ধরনের ক্রিম
আমার মুখে ঘষল এবং তার পর আমাকে আমার চেয়ারে চুপ করিয়ে দীর্ঘ সময় বসিয়ে রেখে দিল।
এইসব ঘষাঘষির মধ্যে দিয়েই শুনলাম কখোন যেন সে ফেসিয়াল ও অন্যান্য আনুসঙ্গিক
কাজ-কর্ম করে ফেলেছে।
দীর্ঘ সময়ে
এইভাবে বসে থাকার পর আমার সহ্যশক্তি বিপজ্জনক ভাবে বিরক্তসীমার দিকে যাচ্ছে, এরকম
সময়ে গোপাল আমায় ছেড়ে দিল। কিন্তু ছাড়বার আগেও পরবর্তী কি কি করা উচিত, ঐ
ফেসিয়ালের কতদিন পর আবার অন্য কিছু করা উচিত সেই নিয়ে দীর্ঘ জ্ঞান দান করল গোপাল।
যাই হোক এটা হল
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের ঘটনা। তারপর ব্যাঙ্গালোরে ফিরে গোপালের পরামর্শমত এবং
মৃন্ময়ের নিয়মিত ফোনালাপের ধাক্কায়ে বেশ নিয়ম করেই নিজের মুখের পরিচর্যা করেছি।
আহা যতই আমার গায়ের রঙ দুধে-আলকাতরায় হোক নিজের বিয়েতে একটু হলেও তো ফর্সা দেখতে
হবে, নাকি!
তারপর আজ আবার
গোপালের কাছে গিয়ে তিন ঘন্টা কাটিয়ে বিয়ের আগের ফাইনাল রূপচর্চা করে এসেছি। তার
মধ্যে চুল কাটা, স্যাম্পু, দাড়ি কামানো, ফেসিয়াল, ব্লিচ... হুঁ হুঁ বাওয়া... লিস্ট
মোটেই ছোট নয়... এই সব করে ফেলেছি ঐ তিন ঘন্টায়। সবাই যা বলল, তাতে মনে হচ্ছে বেশ
চকচকেই লাগছে।
যাই হোক, এই
অ্যাডভেঞ্চারের কোন ছবি নেই, থাকলেও দিতাম না... তার চেয়ে বরং এর পরের কিস্তিতে
যখন আইবুড়ো ভাত নিয়ে লিখব, তখন তার বেশ কিছু ছবি লাগাবো। আজ এইটুকুই থাক!
ore baba, ruupchorchar ekbar rehearsal, arekbar final? darun byapar to. khub bhalo khub bhalo. amio nishchit tomake darun dekhachchhe Tapabrata. lekhata pore khub moja pelam. nijer obhignota thakay besh relate-o korte parlam.
ReplyDeleteaasonno biyer jonyo onek shubhakamana. tomake ar tomar bhaabi streer jonyo.
Thank You Kuntala!!
ReplyDelete